Ticker

6/recent/Main-posts

Header Ads

তথ্য সন্ত্রাসের ফাঁদে আলেমরা

এতদিন নায়েবে আমীর মুফতি ফয়জুল করীম সাহেব হাফিযাহুল্লাহ বলেছেন যে, সরকারের লোকেরা বন্দী আলেমদের মন বিষিয়ে তুলছে এ কথা বলে যে "আপনাদেরকে গ্রেফতার করিয়েছে আপনাদের আলেমরাই"।হযরতের এ কথাটি অনেকেই গুরুত্ব না দিলেও বাস্তবতা এখন সামনে এসে গেছে।

পড়ুন বিস্তারিত
লিখেছেন, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের ভাষ্যকার মুফতি Lutfor Faraji


"""""আমরা তথ্য-সন্ত্রাসের শিকার "

যে ফাঁদের দাবার গুটি কতিপয় মাওলানা!

একজন বড় আলেম ও আলোচিত ওয়ায়েজ। অনেক দিন যাবত জেলবন্দী ছিলেন। আমরা অনেক দুআ করেছি হযরতের জন্য। দিল থেকেই কস্ট পেয়েছি হযরতের বন্দীত্বে।
অবশেষে রব্বে কারীমের রাহমাতে তিনি মুক্ত হলেন। গেলাম হযরতের সাথে সাক্ষাত করতে। অনেক কথা হলো। এর মাঝে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তিনি জেলখানায় বন্দী থাকার পেছনে আমাদেরই কতিপয় আলেমদের হাত আছে। এ তথ্য তাকে নিশ্চিত করেছেন এনএসআই এর উর্দ্ধৃতন কর্মকর্তা।
এছাড়া রিমান্ডেও বারবার তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তাদের ধরার পেছনে ইনফরমেশন দিয়েছে তাদেরই ঘরের আলেম উলামা। তারা যেন বের হতে না পারেন এজন্যও লবিং করছেন ঘরের মানুষগুলোই।

আফসোস লেগেছিল। যদিও মন থেকে কথাগুলো মানতে পারছিলাম না। আমাদের ঘরানার আলেমদের কি স্বার্থ আরেক আলেম বন্দী থাকলে? এ প্রশ্নের কোন যৌক্তিক উত্তর আমার আজো বুঝে আসেনি।

দুই এক মাস পরের ঘটনা। আরেকজন প্রসিদ্ধ বক্তা। তিনি আমার অনূজ। বাকি প্রসিদ্ধ আলোচক। তিনি আচমকা এক মামলায় গ্রেফতার হলেন। বের হবার পর আমাকে ফোন দিয়ে আফসোস করে বললেন যে, তাকে গ্রেফতার করিয়েছেন প্রথমোক্ত বড় আলেম বক্তা।
আমি বললাম: একথা আপনাকে কে বলছে?
মাওলানা জানালেন: এনএসআই এর একজন কর্মকর্তা।
আমি বললাম: আমি এটা কিছুতেই বিশ্বাস করি না। আপনাকে গ্রেফতারে হযরতের স্বার্থ কী?
মাওলানা বললেন: এটাতো আমিও বুঝি না।
আমি বললাম: আপনি নিশ্চিত থাকেন এটা হযরত করেননি। এটা পরিস্কার একটি চাল। আপনি একজন ফাসেক অফিসারের কথা বিশ্বাস করে একজন আলেমকে সন্দেহ করছেন। শুধুমাত্র একজন ফাসেকের মুখের কথা কখনোই একজন আলেমের চরিত্র যাচাইয়ের মানদণ্ড হতে পারে না।
কিন্তু আমার কথায় তিনি পুরোপুরি আশ্বস্ত হয়েছেন বলে মনে হয়নি। তার মনে হয়তো সন্দেহের দানা রয়েই গেছে।

দুই মাস আগে এক মাহফিলে গেলাম নোয়াখালীতে। সেখানে দেখা হলো হাটহাজারী মামলায় গ্রেফতার ও দীর্ঘ সময় কারাভোগ করা এক মাওলানার সাথে।
তিনি জানালেন অবাক করা তথ্য। মাওলানা বললেন, ‘হযরত আমরা একসাথে যারা গ্রেফতার হয়েছে। আমাদের যখন রিমান্ডে নেয়া হলো, তখন আমাকে বলা হলো, আমাকে গ্রেফতার করতে সহযোগিতা করেছে আমারি সাথী।
আবার যখন আমার সেই সাথীর সাথে দেখা হলো, সেতো আমার উপর খুব ক্ষীপ্ত হয়ে বলতে লাগলো: আপনি কী করে আমাকে গ্রেফতার করাতে পুলিশকে তথ্য দিতে পারলেন? একথা শুনেতো আমি অবাক।
এভাবে আমাদের একজনকে আরেকজনকে ধরিয়ে দিতে ইনফরমেশন এবং তথ্য দেবার কথা বলে প্রশাসন আমাদের একজনকে আরেকজনের দুশমন বানিয়ে দিয়েছে। এখন আমরা একজন আরেকজনকে মোটেও বিশ্বাস করতে পারছি না।

“ডিভাইডেন্ট রোল” ইংরেজদের এ মূলনীতি ভালোই কাজে লেগেছে আমাদের উপর। যেভাবে আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে কোন যাচাই ছাড়াই “আমাদের আলেমদের কারণেই আলেমরা বন্দী’ বলে জিগির তুলছি মূলত এটাই সরকার চায়।
হেফাজতের গণজাগরণ দেখে সত্যিই ভড়কে যায় সরকার। এ সুদৃঢ় বন্ধন খান খান করে দিতে এ ‘তথ্য সন্ত্রাস’ যুতসইভাবেই প্রয়োগ করা হয়েছে আমাদের উপর। আমরা অনায়াসেই সেই ফাঁদে পা দিয়েছি।
‘ফাসেকের কথা শক্তিশালী দলীল ছাড়া গ্রহণ না করার’ কুরআনী নির্দেশনা অমান্য করে বলে যাচ্ছি যাচ্ছেতাই।
আলেমের কথার চেয়ে আমাদের কাছে ফাসেক ব্যক্তির মুখের কথা অনেক গ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে।

আল্লাহ তাআলা এ গভীর ষড়যন্ত্রের হাত থেকে এ দেশের আলেম সমাজ ও তৌহিদী জনতাকে হেফাজত করুন। আমীন।

Post a Comment

0 Comments