আমি ও চরমোনাই এবং কিছু কথা।
----- নুরুল্লাহ কাসেমী
আমি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর অন্তর্ভুক্ত আহলে হক্ব প্রতিটা জামাতকে অন্তর থেকে ভালবাসি মহব্বত করি এবং সাধ্য অনুযায়ী সাহায্যের চেষ্টা করি (ইন্টার্নাল)
আমি রাজনৈতিক মানুষ নই রাজনীতিকরা আমার শায়েখ হাফিজাহুল্লাহ এর অনুমতি নাই।
আমি হাটহাজারী,ঢাকা আলিয়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি দারুল উলুম দেওবন্দে চার বছর পড়াশোনা করেছি। আমার এখন যথেষ্ট একটা বয়স হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলি,চরমোনাই কে নিয়ে আমাকে প্রচন্ড গালাগালি করছে একদল লোক, আমার ইনবক্সে গালাগালি'র পসরা সাজিয়েছে তারা,অথচ চরমোনাইয়ের সাথে আমার ন্যূনতম কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।
এবং আমি এতটুকু বলি যে গত কিছুদিন আগ পযন্ত আমি চরমোনাইকে তেমন একটা পছন্দও করতাম না। আমি যতটুকু শুনেছিলাম যে তারা পুরোপুরি দেওবন্দে মাসলাকের নয়।কিছু স্বতন্ত্র নিজস্ব গোমরাহি রয়েছে তাই আমি কখনোই তাদের কাছে যাওয়া, তাদের সাথে মিশা কোনোটাই করিনি।
তবে এতুটুকু সত্য! আমি কখনোই প্রকাশ্যে চরমোনাই বিরোধিতা করিনি। কারণ আমি নিজে তাদের দ্বারা আমার আশেপাশে অনেক মানুষকে পরিবর্তন হতে দেখেছি,যারা আমার আশেপাশে থাকার পরেও আমার দাওয়াত তাদের কাছে পৌঁছায়নি। তাদের দাওয়াত ঠিকি পৌঁছেছে। তাই নিজে অপছন্দ করলেও উম্মাহ'র বৃহত্তর স্বার্থে নিজের জবান ধরে রেখেছি। এবং আমার একটা উসুল হলো আমি কারো কথায় নয় নিজের চোখে দেখা এবং নিজের কানে শোনা কে বিশ্বাস করি।
গত বেশ কয়েক বছর চরমোনাইকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিলো। তাদের নানান অসঙ্গতির কথা উঠে আসছিল। তখন নিজ চোখে তাদের কর্মকান্ড দেখার জন্য অনেক বেশি আগ্রহী হই। আমি অধম যেহেতু মাদ্রাসা কিছু পড়াশোনা করেছি তাই, হক্ব-বাতিল সম্পর্কে নিজের স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরী মনে করি।
এর ভিতরে আমি আমার স্নেহের ছোট ভাই মহতারাম মুফতি ইফরান কাসেমী হাফিজাহুল্লাহ ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিজামা ও ফিজিওথেরাপিস্ট Iqbal Shahedi মাওলানা ইকবাল শাহেদী হাফিজহুল্লাহ'র কাছে হিজামা করাতে যাই। হিজামা চলাকালীন স্নেহের মাওলানা'র সাথে চরমোনাইর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা চলতে থাকে। একপর্যায়ে মাওলানা, চরমোনাই নিয়ে আমার বিভিন্ন আপত্তির সুন্দর গোছালো উত্তর দেয়। আমার বেশ মনে ধরে। এবং মাওলানা ইকবাল শাহেদী হাফিজাহুল্লাহ আমাকে বলেন ভাইজন আপনি নিজ চোখে দেখে আসুন! এইতো কয়েকদিন পরেই চরমোনাই মাহফিল। আমিও রাজি হই। তবে মাহফিলের শুরুতেই যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, বলে দেই। কারণ আমার ব্যস্ততা। পরে ঠিক হয় আমি ও মাওলানা মাহফিলের শুরুর ১দিন পরে যাবো। তবে শেষ পযন্ত মাওলানা যেতে পারেনি পারিবারিক জটিল এক সমস্যার কারণে। আমি একাই মাহফিলে রওনা হই এবং একদিন থাকার নিয়তে যেয়ে প্রায় আড়াই দিন থেকে আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে আসি।
আমি এই অধম নালায়েক, মা-বাবা ও ওস্তাদদের নেক নজর ও দোয়ায় যতটুকু ইলম হাসিলের চেষ্টায় আছি, (এখনো নিজেকে সব সময় ছাত্র মনে করি,তবে এই অধম হাদিস ও ফিক্বহের ক্লাস নিয়ে থাকি প্রায় ২১ বছর যাবত ) আমি আমার এই আড়াইদিনে তাদের যতটুকু পেরেছি ততটুকু অনুসন্ধানী চোখে দেখে এইটাই ক্লিয়ার হয়েছি আমি নালায়েক তাদের বিষয়ে স্পষ্ট ভুলে ছিলাম। তারা মৌলিকতন্ত্রে ১০০% দেওবন্দের অনুসারী। আমি আরো আশ্চর্য হয়েছি তাদের দু'ভাই দেওবন্দে পড়েছেন। এবং তাদের যে বর্তমান আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম হাফিজাহুল্লাহ কে আমার ওস্তাদ মুহতারাম মুফতিয়ে আজম দেওবন্দ আল্লামা হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী রহ. খেলাফত দিয়েছেন।
চরমোনাইতে দেওবন্দের শীর্ষ বুজুর্গ ওলামায়েকরাম নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। এবং আমি চরমোনাই থেকে এসে আমার হযরত, আমার শায়েখ দেওবন্দের কন্ঠ হাফিজাহুল্লাহকে ফোনে বিস্তারিত বলি, পাশাপাশি আমার ওস্তাদতুল্য শীর্ষ বেশ কিছু ওলামায় কেরামের সাথে কথা বলি তারা সবাই এক কথায় চরমোনাই'র পূর্ণ দেওবন্দিয়ত্বের মাসলাকে পরিচালিত বলে শিকার করেন, সমর্থন করেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে উগ্র ইয়াং কিছু পোলাপান ছাড়া আহলে হক্ব সবাই চরমোনাইকে মহব্বত করতে দেখি [ উল্লেখ্য: আমার শায়েখ হাফিজাহুল্লাহ চরমোনাইতে কয়েকবার এসেছেন ] তিনি তিনার দেখা অভিজ্ঞতাও আমার সাথে শেয়ার করেছেন। আমার শায়েখ বলেছেন চরমোনাই এর সাথে মহব্বত রাখতে এবং মহব্বত না রাখলেও কোন প্রকারে যেন বিরোধিতা না করি। এইটা মকবুল জামায়াত। শরীয়তের স্পষ্ট কারণ ছাড়া কোনো মকবুল জামায়াতের বিরোধিতা করা নিজের গোমরাহী ।
শেষ কথা,চরমোনাইয়ের সাথে আমার আগে-পরে কোনোকালেই কোন সম্পর্ক ছিল না।এখনো কোনো সম্পর্ক নেই, আমি তাদের মুরিদ নই, এবং আমি রাজনীতিও করি না। আর আমি বক্তা কিংবা ওয়ায়েজীন নই। তাই অনুগ্রহ করে আমাকে গালাগালি করবেন না । অন্তত আমি চরমোনাইয়ের অন্ধ মুরিদ। কীর্তনখোলা নদীর পাড়ের অনুসারী। চরমোনাইয়ের গোমরা। চরমোনাই এর প্রশংসা করলেন মাহফিলে দাওয়াত দিবে এগুলা আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
হে এইটা সত্য আগে ভিতরগত ভাবে তাদেরকে অপছন্দ করতাম। এখন নিজ চোখে দেখে এবং শায়েখ ও আদেশে মহব্বত করি। এবং যতদিন তারা হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে ততদিন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য জামায়াতের মত মহব্বত করেই যাবো ইনশাআল্লাহ।
(আমার মহব্বতও আল্লাহর জন্য আমার শত্রুতাও আল্লাহর জন্য)
0 Comments