অনলাইনে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ হল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে নিয়ে পজেটিভ কথা বলা। বাস্তবতার নিরিখেও যদি কিছু বলা হয় তবুও রেহাই নেই। শুরু হবে চতুর্দিক থেকে হাম*লা। অপ*মান, অপদস্ত*তার যতগুলো দিক হতে পারে এর সবটাই প্রয়োগ হবে। ব্যাক্তিগত আক্র*মণ, ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ আর ট্রল তো আছেই!
এক্ষেত্রে এমন এমন অভিযোগের তীর ছোড়া হবে যা কল্পনাতীত। টাকায় কেনা,বেতনভোগী, সুবিধাভোগী,পালিত,মাহফিল পাওয়া, স্টেজে জায়গা পাওয়া এসব মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডা তো এখন নিয়মিত বয়ানের অংশ! এবং ফেবু কমেন্ট বানিজ্যের রসদও বটে।
খুব বেশি খারাপ লাগে যখন এসব কাজে একান্ত ব্যক্তিগত পরিচিত ও জানাশোনা ভাইদেরও শামিল হতে দেখি। এ ব্যাপারগুলো যে অপবাদ, তোহমত এটাও যেন ভুলে যায়!
এরচেয়েও ভয়াবহ হল,ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা ও ব্যক্তিত্বকে ক্ষত-বিক্ষত করে দিবে। শুধু এদের নিয়ে পজেটিভ বলার দরুন ইলম,দ্বীনি খেদমত প্রশ্ন*বিদ্ধ হবে। আম-খাস মজলিসে সমা*লোচনার ঝড় উঠবে। হায় হায় রব উঠবে।
টার্গেট একটাই, অবস্থান পরিবর্তন করতেই হবে। পজেটিভ বলাই যাবেনা। যদি বলতেই হয় নেগেটিভ কিছু বলতে হবে,লিখতে হবে। এক্ষেত্রে শরিয়ত, উসুলে শরিয়ত খেয়াল না রাখলেও অসুবিধা নাই।
ইসলামী আন্দোলন নিয়ে পজেটিভ কিছু করেছেন আর তিনি এমন বাজে ও তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হননি তা দেখানো একপ্রকার অসম্ভব। বরং পরে আলাদা স্টেটাস দিয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে হয়েছে।
কয়েক ডজন উলামায়ে কেরামের নাম বলা যাবে যারা একসময় সবমহলে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। ফেবুপাড়া তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতো। কিন্তু যখনই কোনভাবে ইসলামী আন্দোলনের সাথে নাম এসেছে,কোন মাজলিসে, মাহফিলে বা বৈঠকে গেছেন
অমনি সব শেষ! গ্রহণযোগ্যতা তলানিতে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছেতাই বলাও জায়েয। তুচ্ছ*তাচ্ছিল্য, ট্রল,ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ এসব তো মামুলি ব্যাপার।
এর বিপরীতে নেগেটিভ বলা ও লেখার দারুণ কদর। ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। চতুর্দিকে বাহ বাহ ধ্বনি উঠবে। অনলাইন- অফলাইনে আম-খাস মজলিসে।
এইতো ক'দিন আগে কিছু ভাইদের ভুয়সী প্রশংসার ঝড় বইতে দেখলাম। সাহসী, বীর। হক ও হক্কানিয়্যতের ঝান্ডাবাহী উপাধি দিতেও দেখলাম। ভাবলাম হয়তো কোন না*স্তিক - মুর*তাদকে ধরাশায়ী করেছেন! অথবা কোন বাতিল ও ভ্রান্ত মতবাদ নিয়ে কিছু একটা করেছেন!!
পরে আমার ধারণা ভুল প্রমাণ হল। তিনি ও তারা এমন কিছুই করেননি। বরং ইসলামী আন্দোলন ও চরমোনাইকে বাতিল প্রমাণে আদা-জল খেয়ে নেমেছেন। আত্ম*কলহ ও কোন্দল উ*স্কে দেয়ার কাজে মনোনিবেশ করেছেন। মীমাংসিত ও একান্ত ব্যক্তিগত সমস্যাকে পুরো দল ও সংশ্লিষ্ট সবার উপর চাপিয়ে দিয়ে পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন।
শরয়ী কোন সমস্যা দেখা দিলে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে অসুবিধা নাই বরং অপরিহার্য। দ্বীন,ঈমান ও ইসলামের স্বার্থে ওইগুলো আলোচনা, পর্যালোচনা এমনকি সমালোচনাও হতে পারে৷ আলহামদুলিল্লাহ আমি নিজেও এধরণের বিষয় নজরে আসার সাথে সাথেই প্রতি*বাদ জানিয়েছি। ইনশাআল্লাহ আগামীতেও জানাবো। শরিয়তের কোন বিষয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর আমরা কিছু বলবো না এমনটা হতে পারেনা।
কিন্তু এর বাহিরে অবাস্তব ও অবা*ন্তর অভিযোগ আরোপ। দল ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে ট্র*ল ও ব্য*ঙ্গ-বিদ্রু*প কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
উপরোক্ত অভিজ্ঞতা একান্ত আমার এবং এ ভয়াবহ,ভয়ংকর ও তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার আমি নিজে৷ প্রতিনিয়ত এমন এমন অবাস্তব, অবান্তর অপবাদের শিকার হচ্ছি যা কল্পনাতীত।
ব্যাক্তিগতভাবে সরাসরি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত না হলেও কিছু ভাইদেরকে তোহ*মত ও অপবাদের গুনাহ থেকে বাচানোর জন্য গত কয়েকবছর যাবত ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদে নাম লিখিয়েছি। কিন্তু এরপরও নিস্তার নাই। ওইসব চলতেই থাকে। আমি এদেরকে মাজুর মনে করি।
তবে এসবে আমি মোটেও বিচলিত নই। বরং ফায়দাই হয়েছে৷ কারণ এতে করে বিরুদ্ধ*বাদীদের অনেক কিছুই বুঝা সহজ হচ্ছে। খুব সহজেই অনুমান করতে পারছি তাদের মূল্যায়নের মাপকাঠি ও বাস্তবতা।
বুঝতে পারছি আমাদের নিয়ে যেমন ধারণাপ্রসুত অবাস্তব ও অবান্তর কথা বলে বেড়ায় অন্যদের নিয়েও তা-ই করে।
তবে কারো উপর আমার রাগ-ক্ষোভ নেই। দোয়া ও ভালবাসা থাকবে,সবসময়।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে পক্ষপাত ও বিরো*ধিতার সীমা*লঙ্ঘন থেকে হেফাজত করুন।
লিখেছেন : মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফি
0 Comments